লেখক: অম্লান দাস সৌরভ
Sylhet MoulaviBazar Sadar.
ডেলিভারি চার্জ: 110
Service৭ দিনে রিটার্ন (বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে ৭ দিনে রিটার্ন)
গানের সাথে সমীরণ দাসের সম্পৃক্ততার অনেক সূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। গ্রামে মনসাদেবীর পুজো হলেই পিতামহ দীনদয়াল দাসকে পাওয়া যেতো পদ্মপুরাণের আসরে। সমীরণ দাসের পিতা দূর্গাপ্রসাদ দাস গানের জন্য ছিলেন এলাকাখ্যাত। ধারণা করা যায় পিতা, কাকামশাই ও বড়ভাইদের গানের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থেকেই সমীরণ দাসের হৃদয়ে গান রচনার আগ্রহ জেগে ওঠে। বাল্যকালে পিতার কাঁধে চেপে গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে পদ্মপুরাণ পাঠ দেখতে যেতেন। এভাবেই তাঁর সাথে একে একে পরিচয় ঘটতে থাকে ভজনগান, নাম সংকীর্তণ, উচ্চ-কীর্তণ, আরতি, পালাগান, যাত্রাগান, বাউলগানসহ বিভিন্ন লোকগানের সাথে। এরইমাঝে তিনি নিজে গান লেখা শুরু করেন এবং গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সেগুলো গাওয়া হতে থাকে। সেসব গান তখন সংগ্রহ করে রাখা হয়নি, যার ফলে হারিয়ে গেছে চিরতরে। একসময় পিতার প্রয়াণের পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। বেশ কিছু বছর তিনি সরে দাঁড়ান গানের এই আধ্যাত্মিক জগৎ থেকে। জীবন ও জীবিকার সন্ধানই তখন হয়ে দাঁড়ায় তাঁর একমাত্র সংগ্রামের বিষয়। পরিবারের ব্যয়ভার বহনের ফাঁকেও তিনি লেখাপড়া চালিয়ে যান। জীবনের এই কঠিন থেকে কঠিনতর লড়াইয়ের মাঝে ১৯৭৫ সালে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা কার্যালয়ে অফিস সহকারি কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করেন । পারিবারিক জীবনে সমীরণ দাস একজন সফল ব্যক্তি। স্ত্রী রীণা দাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। দুইমেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং একমাত্র ছেলে উপজেলা পরিষদে কর্মরত। ২০১৫ সালে তিনি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং গান রচনায় মনোনিবেশ করেন। “গীতমাধুরী” গ্রন্থে ১৯৬ টি গানের সংকলন করা হয়েছে। ধামাইল গান, ভজন গান, শ্যামা সংগীত, আঞ্চলিক গান ছাড়াও কিছু দেশের গান এতে সংকলিত করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন । বর্তমানে তিনি বড়লেখা উপজেলা পরিষদে কর্মরত। তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজে নিয়োজিত আছেন । কাজ করছেন পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে। হাকালুকি হাওরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ক্যাম্পিং প্রোগ্রামে তিনি সম্পৃক্ত আছেন। সেইসাথে লোকজ সংস্কৃতিকে ধারণ করে আছেন হৃদয়ে। তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বড়লেখার সাথে যুক্ত রয়েছেন। অনিয়মিত লেখালেখি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিনে। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা বাংলা পত্রিকা ‘বাংলা সংবাদ’ এ লোক সংস্কৃতি নিয়ে তিনি গবেষণাধর্মী লেখা নিয়মিত লিখছেন।